অন্যমনে সাহিত্য. অন্য রকম দৃষ্টিকোন থেকে দেখা একটি প্রতিবিম্ব ভাবনা .. অন্যমনে সাহিত্য.

রবিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২১

লক ডাউনে সৌমেন

 

 

করোনা কামড়


===========================
সৌমেন দেবনাথ
===========================

কেউ বোঝে না দুখীর কষ্ট

ঘরেতে নেই খানা,

দেশজুড়ে চলছে লকডাউন

বাইরে যেতে মানা।

 

পেট বোঝে না কোন বারণ

আছে খরচ নানা,

কেউ দেবে না মাগনা মাগনা 

একটু খাদ্যদানা।

 



এক করোনা থেকে বাঁচতে

দশ রোগ ছাড়ছে ডানা,

সঞ্চয় যত খরচ হলো

কর্মহীন একটানা।



কত কষ্ট সহ্য করছি

করোনা তুই যা না,

জীবন সবার যাচ্ছে চলে

দিস না তুই আর হানা।








করোনা কাল
===========================


ঘুরাঘুরি করতে বারণ

চলছে করোনা কাল,

বিধি-নিষেধ না মানলে ভাই

বেহাল হবে যে হাল।



মাস্ক পরবো বাইরে গেলে

থাকবো দূরে দূরে,

দ্রুত ঘরে আসবো ফিরে

বাইরেতে না ঘুরে।



ঘরে ফিরে সাবান দিয়ে

হাত দুই নেবো ধুয়ে,

অল্প-স্বল্প ব্যায়াম করবো

থাকবো না তো শুয়ে।



পুষ্টিযুক্ত খাবার খাবো

থাকবো হাসি ভরা,

কেটে যাবে মহামারী

পাবো সুস্থ ধরা।









পরিবর্তন
===========================


কলেজ ছুটি বাড়ছে ক্রমে

পঁচছি আস্তে আস্তে,

মাঠে ঘাটে কামলা খাটছি

হাতে নিয়ে কাস্তে।



শার্ট প্যান্ট কত দিন পরি না

থাকি লুঙ্গি পরে,

জাদরেল কৃষক গেছি হয়ে

অলস থেকে ঘরে।



কলম উঠে না আর হাতে

পান্তা খেয়ে মাঠে,

কেউ বলবে না শিক্ষক আমি

কুড়াল চালাই কাঠে।



করোনার এই করুণ কালে

কষ্ট করে বাঁচা,

ক্ষেত খামারে কাজ তো করি

মেরে এক মালকাঁচা।



হাতে নেই মার্কার আর ডাস্টার

যাচ্ছি ভুলে পড়া,

সেই নরম তুলতুলে হাতে

পড়ছে ঠোলা কড়া।



ইন করে আর হয় না সাজা

পরি না পায়ে সু,

রোদে পুড়ে, জলে ভিজে

যাচ্ছে আজ কাল পরশু।



মাথার চুলে জটলা বাঁধছে

মুখে খোঁচা দাঁড়ি,

নিজেকে নিজেই চিনছি না

দিচ্ছি অকূল পাড়ি।



মাঠে ঘাটে থাকলেও আমার

কলেজ চোখে ভাসে,

ফিরবো কবে জানি না তো

ফিরবো কবে ক্লাসে!






কোভিডে শ্রমজীবী
===========================


লকডাউনে শ্রমজীবী

পড়ে গেছে আটকা,

অন্যদিকে ধনীক শ্রেণি

খাচ্ছে তাজা টাটকা।



রিক্সা রাস্তায় উল্টে থাকে

ঘরে তাদের নেই চাল,

ব্যক্তিগত গাড়ি চলছে

সেদিক কারো নেই খেয়াল।



গাড়ির চালক আরো কষ্টে

নীলচে দুঃখে রেঙে,

মরার আগেই মরে যাচ্ছে

কোমর যাচ্ছে ভেঙে।



ধরা থেকে জ্বরা কাটুক

বাঁচুক সবাই আশায়,

শ্রমজীবীরা খেটে খাবে

রইবে না বসে বাসায়।









বিশ-একুশের জ্বালা
===========================


স্বপ্ন আশার বিশ আর একুশ

নানান রঙে রেঙে

বেকার আমায় করে দিয়ে

কোমর দেছে ভেঙে।



কাজ হারিয়ে ঘরে বসে

যাচ্ছি জলে ভেসে,

বিশের জ্বালা বেশি বিষের

গেছি একদম ফেঁসে।



মাসের পর মাস কাজ নেই হাতে

বলো কেমন লাগে,

মেজাজ মর্জি ঠিক থাকে না

জ্বলে মরি রাগে।



কাজে থাকলে ভালো লাগে

বন্ধু-বান্ধব সঙ্গে,

বন্দী ঘরে একা একা

সয় না সোনার অঙ্গে।



টাকা বিহীন জ্বালায় থাকে

পুরুষ মানুষ যারা,

কাজ হারিয়ে নিঃস্ব সবাই

মনে মনে মারা।



দ্রব্য মূল্যের দামে আগুন

পকেট কিন্তু ফাঁকা,

জীবন যুদ্ধে যাচ্ছি হেরে

দৈন্য যায় না ঢাকা।



জীবন যাত্রা বদলে গেছে

রুক্ষ্ম শুষ্ক মেজাজ,

পেটে ভাতে বাঁচবো বলে

কাজ ফিরিয়ে দাও কাজ।



সান্ত্বনা নেই মনের মাঝে

হাল হয়েছে বেহাল,

কাটবে কবে করোনা কাল

চাই সেই রাঙা সকাল।







কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন